কালিয়াকৈরের রঘুনাথপুর বিটে বনের মাটি কাটা চলছেই
নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে জোতের সঙ্গে সংরক্ষিত বনের মাটি কাটা চলছেই। এতে বিলীন হচ্ছে বনভূমি। হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য।
ঢাকা বন বিভাগের কালিয়াকৈর রেঞ্জের রঘুনাথপুর বিটে মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য এখন বেশি। বর্তমান বিট কর্মকর্তাও বেপরোয়া হয়ে উঠছেন।
বিষয়টির ওপর ইতিপূর্বে ঘটনার আড়ালে-তে একাধিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় বেশ কিছুদিন মাটি কাটা বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি তা আবার বেড়েছে।
সরেজমিনে জানা যায়, মাটি ব্যবসায়ীরা এক স্পট নিয়ে লেখালেখি হলে আরেক স্পট চালু করেন। রাত হলেই কতগুলো ডাম্প ট্রাকযোগে বিভিন্ন স্থানে মাটি সরবরাহ করা শুরু হয়। আগে ব্যবসা করছিল স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রুবেল চক্র। ঘটনার আড়ালে-তে প্রতিবেদন প্রকাশের পর রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় আরেকটি চক্র গড়ে উঠেছে। নিয়ন্ত্রণ এখন তাদের হাতে।
উত্তর নয়াপাড়া এলাকার নবজাগরণ ক্লাবের পশ্চিম দিকে আনুমানিক পাঁচ বিঘা আয়তনের একটি মাছের খামার খনন করা হচ্ছে। স্পটটির পূর্ব ও পশ্চিম পাশ ঘেঁষে সংরক্ষিত গজারি বন। নূরুল ইসলাম নামের একজন সেখানকার মাটি কিনে ওই চক্রের কাছে বিক্রি করেছেন। তাদের ডিমারকেশন নেই।
স্পটে ভেকু রেখে প্রায় প্রতিদিন গভীর করে মাটি কাটা হচ্ছে। বনভূমির অংশও কাটা পড়ছে। ধসে পড়ার ঝুঁকিতে পড়েছে বন।
এই স্পটের কিছু দক্ষিণে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি আনুমানিক তিন বিঘা আয়তনের একটি মাছের খামার খনন করছেন। স্পটটির পূর্ব, পশ্চিম ও উত্তর পাশ ঘেঁষে বন। তাদেরও ডিমারকেশন নেই।
এরই মধ্যে স্পটটির এক বিঘা জমির মাটি কাটা হয়েছে। ধসে পড়ার ঝুঁকিতে পড়ছে সংলগ্ন বন।
অথচ আইন অনুযায়ী, সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘেঁষে পুকুর বা খামার খননের কোন সুযোগ নেই। আর জমির শ্রেণি পরিবর্তন করলে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি সংলগ্ন সরকারি ভূমি থাকলে করতে হয় ডিমারকেশন।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, বিট কর্মকর্তা শাহ জালালের সঙ্গে মাটি ব্যবসায়ীদের বেশ সখ্যতা রয়েছে। তিনি প্রতি রাতের জন্য স্পটপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে নেন। এ পর্যন্ত কয়েক লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
তবে রঘুনাথপুর বিট কর্মকর্তা শাহ জালাল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের কৈফিয়ত চেয়ে তিনি গত ৯ এপ্রিল ঘটনার আড়ালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদককে ফোন করে উত্তেজিত কথাবার্তা বলেছেন। যদিও তিনি ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত না থাকলে অপরাধ অব্যাহতভাবে চলার সুযোগ সৃষ্টি হতো না।
আরও পড়ুন : কালিয়াকৈরের রঘুনাথপুর বিটে ‘রক্ষকদের সহায়তায়’ বন কেটে মাটি বিক্রি!