গাজীপুরের ভাওয়াল রেঞ্জে ৭ রিসোর্টের দখল থেকে ১৩ বিঘা বনভূমি উদ্ধার

ঘটনার আড়ালে প্রতিবেদন : গাজীপুরে মূল্যবান বনভূমি দখল করে অনেক রিসোর্ট ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বন বিভাগ একাধিকবার উচ্ছেদ মোকদ্দমা করলেও এত দিন অভিযান হচ্ছিল না।
এবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী তৎপর হন। তিনি গত ৩ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন।
বৈঠকে মন্ত্রী জবর দখলকৃত বনভূমি উদ্ধারে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন। পরে জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ সমন্বয় করে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে।
জেলা প্রশাসন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ও দিকনির্দেশনায় উচ্ছেদ অভিযান চলছে। একই সঙ্গে নদী, খাল ও বনভূমি দূষণের বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ভাওয়াল রেঞ্জে এ পর্যন্ত দুই দিন অভিযান চালানো হয়েছে। এতে ভেকু দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দখলীয় স্থাপনা। সাতটি রিসোর্ট থেকে ৪ একর ২৩ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১৩ বিঘা সংরক্ষিত বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল বারুইপাড়া বিটে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাফে মোহাম্মদ ছড়া। এ সময় চ্যানেল আই মালিকের ম্যাক্সভ্যালি রিসোর্ট থেকে ৮৫ শতাংশ, অংক বাবুর অনন্ত ভবন রিসোর্ট থেকে ৯৫ শতাংশ, রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট থেকে ৬৩ শতাংশ ও গ্রিনটেক রিসোর্ট থেকে সাড়ে ৫৪ শতাংশ বনভূমি উদ্ধার করা হয়।
গত ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুম মুনীরা কায়ছান। এ সময় বিকেবাড়ি বিটের সাবেক ডিআইজি আবদুল্লাহ হেল বাকীর শালবন গ্রিন রিসোর্ট থেকে ৩০ শতাংশ, ভবানীপুর বিটের নলজানি এলাকার সজনী ফিল্ম সিটি থেকে ৮০ শতাংশ ও রাজেন্দ্রপুর পশ্চিম বিটের শ্যামলী রিসোর্ট এন্ড পিকনিক স্পট থেকে ১৬ শতাংশ বনভূমি উদ্ধার করা হয়।
অভিযান দুটিতে উপস্থিত ছিলেন সহকারী বন সংরক্ষক মোজাম্মেল হোসেন, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রুবিয়া ইসলাম, ভাওয়াল রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুদ রানা, জাতীয় উদ্যান রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী নাজমুল হক, বারুইপাড়া বিট কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন, ভবানীপুর বিট কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, বিকেবাড়ি বিট কর্মকর্তা এলমুন বাহার, রাজেন্দ্রপুর পশ্চিম বিট কর্মকর্তা কামরুজ্জামান মোল্লা, বাউপাড়া বিট কর্মকর্তা আবুল কালাম সামসুদ্দিন প্রমুখ।
এসিএফ মোজাম্মেল হোসেন জানান, উদ্ধারকৃত বনভূমিতে বনায়ন করা হবে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ভাওয়াল রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুদ রানা ঘটনার আড়ালে-কে বলেন, তারা ২০২৩ সালে বনভূমি জবর দখলকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে উচ্ছেদ মোকদ্দমা করেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তার কার্যক্রম মনিটরিং করছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button