গাজীপুরের বাড়ীয়ায় ‘আওয়ামী চক্রের’ রোষানলে ব্যবসায়ী পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরে আওয়ামী চক্রের রোষানলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এক ব্যবসায়ী। প্রতিকার চেয়ে গত ৪ আগস্ট জেলা পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর উপজেলার বাড়ীয়া ইউনিয়নের কুমুন গ্রামের বাসিন্দা নুরু খান (৪৯) একজন পোলট্রি ফিড ব্যবসায়ী। তিনি ২০২১ সালে ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ছিলেন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্নভাবে তার বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা দেওয়া হয়। মামলাগুলো পর্যায়ক্রমে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় তিনি অব্যাহতি পান।

রোশাদিয়া ও চিলনী এলাকায় সাড়ে ১২০০ বিঘা জমিতে বাঁধ দিয়ে মাছের চাষ করা হচ্ছে। এতে নুরু খানসহ অনেক হিন্দু ও মুসলিম পরিবারের জমি জোরপূর্বক দখল করা হয়েছে। বাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান খানের নেতৃত্বে তার ভাতিজা সেলিম খান ও চাচাতো ভাই নূরে আলম খান রতন গং এ দখলযজ্ঞ চালিয়েছে।

চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান খান জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। নূরে আলম খান রতন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তাদের আরেক সহযোগী বন্দান গ্রামের ইউপি মেম্বার মঞ্জুরুল আলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা।

নূরে আলম খান রতনের বিরুদ্ধে জমি দখল ও চাঁদাবাজির একাধিক মামলা রয়েছে। মঞ্জুর মেম্বারের বিরুদ্ধে রয়েছে টিসিবির চাল-ডাল চুরির মামলা। মামলা নম্বর ১২ (১২) ২৪। জয়দেবপুর থানা পুলিশ তাকে রহস্যজনক কারণে গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ।

নুরু খান জানান, ওই চারজন সংঘবদ্ধভাবে বাড়ীয়া ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ করছেন। আওয়ামী লীগ আমলে তারা নানা কৌশলে বাড়ি-গাড়িসহ অগাধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও চক্রটির কিছু হচ্ছে না। স্থানীয় আমতলী পুলিশ ফাঁড়িও তাদের কথায় চলে।

তিনি বলেন, গত ৬ জুলাই তার সম্বন্ধীর ছেলে শাকিবের বিরুদ্ধে ফাঁড়িতে একটি মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়। পরে ফাঁড়িতে গেলে ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম তাকে ধমকিয়ে বলেন, আপনি চেয়ারম্যান ও রতন ভাইয়ের সঙ্গে বিবাদে জড়ান কেন? গ্রামে সালিশ করবে চেয়ারম্যান, রতন ভাই ও মঞ্জুর মেম্বার। আপনি বের হয়ে যান।

নুরু খান জানান, চক্রটি পুলিশের আশ্রয়-প্রশ্রয় পেয়ে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। উল্টো তাকে আওয়ামী লীগের লোক ট্যাগ দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ একাধিকবার তার বাড়িতে হানাও দিয়েছে। ফলে তিনি সপরিবারে নিরাপত্তাহীনতা ও হতাশায় ভুগছেন।

অপরদিকে ২০২৩ সালের ২ মার্চ সাধারণ মানুষের জমি দখল ও বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির অভিযোগ তদন্তে ঘটনাস্থলে যান তখনকার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী। তখন তার সামনেই ভুক্তভোগী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়।

ওই ঘটনায় নুরু খান বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে জয়দেবপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান খানকে ১ নম্বর আসামি করা হয়। শেষে ক্ষমতা ও আইনের ফাঁক দিয়ে তিনি বের হয়ে যান।

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker