গাজীপুরের ধান গবেষণা স্কুলে টেন্ডার ছাড়াই ভবন নির্মাণ!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের ধান গবেষণা উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে জানা যায়, স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আখের আলী দেওয়ান এখানে ২০০৬ সালে যোগদান করেন। এরপর নানা কৌশলে শুরু হয় বাণিজ্য।

স্কুলটিতে শ্রেণিকক্ষ, বিজ্ঞানাগার ও ছাত্রীদের কমন রুমের সংকট রয়েছে। বন্ধ রয়েছে মানবিক শাখার কার্যক্রম।

এর প্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বরে পাঁচ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে নতুন একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। কাটা হয়েছে একাধিক গাছ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভবনটি নির্মাণে কোন টেন্ডার দেওয়া হয়নি। প্রধান শিক্ষক তার পছন্দের লোক দিয়ে মালামাল কিনে ভাউচার করছেন।

এ ছাড়া গত বছর বালু ফেলে স্কুলের মাঠ উন্নয়নের কাজ করা হয়। সে কাজেও নিয়ম না মেনে দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি আলোকিত নিউজকে বলেন, কাজ স্কুল ফান্ড থেকে হচ্ছে। করতে করতে যতটুকু করা যায়। প্রথমে এক তলা হবে।

টেন্ডার না দেওয়ার বিষয়ে বলেন, পিপিআরের ডিপিএম পদ্ধতি (সরাসরি ক্রয়) অবলম্বন করে কাজটা হচ্ছে। আমি ক্রয় কমিটির একজন।

বাজেটের পরিমাণ জানতে চাইলে আখের আলী দেওয়ান বলেন, কোন বাজেট করা হয়নি। ডিজি ধীরে ধীরে করার অনুমতি দিয়েছেন।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক পদাধিকারবলে স্কুলের সভাপতি। বর্তমান ডিজি হলেন ড. শাহজাহান কবীর।

রড বা সিমেন্ট কেনায় একবারে সর্বোচ্চ কত ভাউচার হচ্ছে-প্রশ্নের উত্তরে প্রধান শিক্ষক বলেন, রডের বাজার দাম ৫৮ টাকা কেজি। আমরা পাঁচ টন বা ১০ টন করে আনি।

মাঠের কাজের বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যয় সঠিক মনে নেই। মনে হয় চার লাখ টাকার মত লাগছে।

তবে সহকারী প্রধান শিক্ষক জীবন চন্দ্র দাস আলোকিত নিউজকে বলেন, ভবন আপাতত দোতলা করা হবে। বাজেট সম্ভবত ৯০ লাখ টাকা।

জানতে চাইলে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ হাসান আলোকিত নিউজকে বলেন, এটা প্রধান শিক্ষক বলতে পারবেন। আমরা ড্রয়িং করে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এখানে সরকারের কোন টাকা খরচ হচ্ছে না। আপনি অফিসে আসেন, ফোনে কোন তথ্য পাবেন না।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী, এ ধরনের ভৌত কাজ স্কুলের উন্নয়ন তহবিল থেকে হলেও সরকারি ক্রয় নীতিমালার বিধি-বিধান মেনে চলা আবশ্যক।

আর সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি হলেও বাজেট বরাদ্দ ও কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে মালামাল সরবরাহকারীর সাথে কার্য সম্পাদন চুক্তিসহ জামানত গ্রহণ বাধ্যতামূলক।

বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, কোন অবস্থাতেই অবাধ প্রতিযোগিতা এড়াবার বা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি, সরবরাহকারী ও ঠিকাদারের প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি বা আনুকূল্য প্রদর্শনের উদ্দেশে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাবে না।

ওয়াকিবহাল সূত্র দাবি করছে, আইন-কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর নেপথ্যে মোটা অঙ্কের বাণিজ্যের উদ্দেশ্য রয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত হলে সব বেরিয়ে আসবে।

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker