শ্রীপুরে বন উজাড় করে ফরেস্টার সেলিমের প্লট বাণিজ্য!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের শ্রীপুরে ছয় বিঘা সংরক্ষিত গজারি বন উজাড় করা হয়েছে।

শ্রীপুর সদর বিটের বিন্দুবাড়ী কসাইপাড়া এলাকায় আকাশমনি বাগানের নামে এ নিধনযজ্ঞ ঘটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কসাইপাড়ায় চারদিকে বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলের মধ্যে ছয় বিঘা সদ্য উজাড়। কেটে নেওয়া হয়েছে ছোট-বড় হাজারো গজারি গাছ।

অন্য প্রজাতির গাছও বাদ যায়নি। দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের গজারি বনের ভেতরে কিছু গাছ স্তূপ করে রাখা হয়েছে।

বিক্রির উদ্দেশে গাছের স্তূপ

অনেক মোথা ন্যাড়া অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। কপিচ কেটে নেওয়ায় প্রখর রোদে প্রকৃতির যেন বুকফাটা হাহাকার।

উজাড়কৃত অংশে আকাশমনি চারা রোপণ করে প্লট বানিয়েছে বিট অফিস। প্লটটি নামে বা বেনামে প্রভাবশালী রাজিব সিরাজীকে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

একাধিক এলাকাবাসী জানান, রাজিব সিরাজীর সাথে যোগসাজশ করেই বিট কর্মকর্তা বন উজাড় শুরু করেন। গাছপালা বিক্রি করে হাতিয়ে নেওয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা।

এদিকে প্লটটির দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে আকাশমনি বাগান। বাগান দুটিতে কেটে নেওয়া বড় বড় গাছের মোথার ছড়াছড়ি।

ছবিটিতে পাঁচটি গাছের মোথা দৃশ্যমান

নতুন-পুরনো মিলিয়ে মোথার সংখ্যা প্রায় ২০০। দক্ষিণ পাশের প্লটের উপকারভোগী রেজিয়া খাতুন ও পূর্ব পাশের উপকারভোগী মৃত জালাল উদ্দিন সিকদারের পরিবার।

এলাকাবাসী জানান, বিট অফিসের লোকজন মাঝে-মধ্যে দিনে আসেন। রাতে টহল না দেওয়ায় গাছ পাচার বাড়ছে।

অপরদিকে আলোকিত নিউজ টিমের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন রাজিব সিরাজী। তিনি ছবি ডিলিট করার জন্য অনুরোধ করেন।

জানতে চাইলে বিট কর্মকর্তা সেলিম মিয়া আলোকিত নিউজকে বলেন, গজারি গাছ কাটা হয়নি। ভাল কপিচ রেখে আগাছা পরিষ্কার করা হয়েছে।

প্লটের ভেতরে কোন কপিচ নেই-জানালে তিনি বলেন, এখানে কপিচ তো ছিল না। গজারি বন খেয়ে ফেলেছে আগেই।

আকাশমনি গাছ কাটা প্রসঙ্গে বিট কর্মকর্তা বলেন, অনেক মামলা আছে। গাছচোর ধরছেও আগে।

দক্ষিণ পাশের প্লটে ঢুকতেই গাছের মোথা

একজন বন কর্মকর্তা বলেন, গজারি বন উজাড় করে আকাশমনি বাগান করার নিয়ম নেই। প্রয়োজনে শাল কপিচ ব্যবস্থাপনার আওতায় উপকারভোগী দেওয়া যেতে পারে।

বনভূমিতে ফাউন্ডেশন বাড়ি : বিন্দুবাড়ী এলাকার আরএস ২০৯ নং দাগের বনভূমিতে ফাউন্ডেশন দিয়ে বাড়ি করছেন বেসরকারি ব্যাংকের চাকরিজীবী শরীফ।

গত ১৫ মে ‘শ্রীপুরে ফরেস্টার সেলিমের দখল বাণিজ্য চলছেই’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তথ্যটি তুলে ধরা হয়েছিল।

টিনের বেড়ায় ঢেকে কাজ অব্যাহত

কিন্তু বন বিভাগ কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ওয়াল এখন সাত ফুট ওপরে উঠেছে।

এ ব্যাপারে বিট কর্মকর্তা দাবি করেন, ওয়াল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। হয়তো আবারও চুরি করে করছে।

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker