গাজীপুরে কনসেপ্ট রেডিমিক্সের বনভূমি দখল : দূষণে জনজীবন অতিষ্ঠ

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুর সদরের বাঘের বাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্ব পাশে গড়ে উঠেছে কনসেপ্ট কংক্রিট লিমিটেড।

কারখানাটি অবাধে দখল করছে বনভূমি। পাশাপাশি শব্দ ও বায়ু দূষণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন।

সরেজমিনে জানা যায়, রেডিমিক্স কংক্রিট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাখাওয়াত হোসেন রোহান ও মাসুদুর রশিদ। তারা বানিয়ারচালার আবদুস সাত্তার ও আবদুল আউয়ালের কাছ থেকে প্রথমে পাঁচ গণ্ডা জমি ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন।

পরে তাদের কাছ থেকে আরও দেড় বিঘা জমি ভাড়া নিয়ে কারখানা সম্প্রসারণ করা হয়। ইতিমধ্যে ঢাকার একজনের কাছ থেকে সংলগ্ন দক্ষিণ পাশের আরও চার বিঘা জমি ভাড়া নিয়ে কিছু গাছপালা কেটে মাটি ভরাট করেন।

গাছপালা কেটে ব্যবহার উপযোগী করার চিত্র

এর কিছু অংশে নতুন প্লান্ট স্থাপন করে উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। কিছু অংশে পাথর ও বালুর স্তূপ। আরেক পাশে রাখা হচ্ছে মালবাহী গাড়ি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রথম পাঁচ গণ্ডা ব্যতীত বাকি সাড়ে পাঁচ বিঘা মাহনা ভবানীপুর মৌজার সিএস ৭৪০ ও ৭৩৮ নং দাগের গেজেটভুক্ত বনভূমি। ভাওয়াল রেঞ্জের ভবানীপুর বিট অফিস শুরু থেকেই নীরব ভূমিকা পালন করে আসছে।

ওই স্থানে বিঘাপ্রতি জমির বর্তমান বাজারমূল্য চার কোটি টাকা। সে হিসাবে বেহাত জমির মূল্য দাঁড়ায় ২২ কোটি টাকা।

এদিকে কারখানাটির পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও নেই। এরপরও ২০১৭ সাল থেকে অদ্যাবধি কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।

স্থানীয় নূরুল ইসলামের ছেলে আল-আমিন আলোকিত নিউজকে জানান, কারখানাটিতে দিন-রাত উৎপাদন চলে। অসহনীয় শব্দে তাদের সুস্থভাবে বসবাস কঠিন হয়ে পড়েছে।

সিমেন্ট ও বালুমিশ্রিত বর্জ্যে সবুজ প্রকৃতি নষ্ট হচ্ছে। ঘাস খেয়ে মারা গেছে দুটি খাসি। রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গবাদিপশু।

কারখানার মূল স্থাপনা ও সংকটাপন্ন পরিবেশ

ভুক্তভোগী আমজাদ হোসেন আলোকিত নিউজকে জানান, কারখানার বর্জ্য বাতাসের মাধ্যমে তাদের ঘরের ভেতরে ঢুকছে। ভাত-তরকারির পাতিলের ভেতরেও বালু পাওয়া যায়। বিকট শব্দে শিশুরা ঘুম থেকে চিৎকার দিয়ে উঠে।

তিনি আরও জানান, তার ২১টি ঘরের ভাড়াটিয়াসহ পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের দুই শতাধিক পরিবার ভোগান্তি পোহাচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই মামলার হুমকি দেওয়া হয়।

এসব ঘটনা নিয়ে তারা গত বছর পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ে পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু প্রতিকার তো দূরের কথা, তদন্তও হয়নি।

এ ব্যাপারে জেলা পরিবেশ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবদুস সালাম সরকারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল ধরেননি।

কনসেপ্ট কংক্রিটে গেলে ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন জানিয়ে সবুজ হোসেন আলোকিত নিউজকে বলেন, আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে। আপনাদের ই-মেইলে পাঠিয়ে দিব।

পরে তাকে ভিজিটিং কার্ড দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও আর সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে ভবানীপুর বিটের চলতি দায়িত্বে থাকা বিট কর্মকর্তা আবুল কালাম শামসুদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখবেন বলে জানান।

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker