কাপাসিয়ায় ডায়মন্ড ও প্রোটিন হাউজের ‘দূষণের রাজত্ব’!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ডায়মন্ড এগ ও প্রোটিন হাউজের বেপরোয়া দূষণে জনজীবন এখন অতিষ্ঠ।

ডায়মন্ড এগ উপজেলার টোক ইউনিয়নের কেন্দুয়াব এলাকায় দুই শতাধিক বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে।

আর পাশের সিংহশ্রী ইউনিয়নের কপালেশ্বর এলাকায় তাদের অপর প্রতিষ্ঠান প্রোটিন হাউজ অবস্থিত।

প্রতিষ্ঠান দুটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন ধরে দূষণের রাজত্ব কায়েম করেছে।

এ নিয়ে উপজেলা ও জেলা প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি এলাকাবাসী।

ইতিপূর্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক শেখ মোজাহিদ তদন্ত করলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।

সরেজমিনে জানা যায়, ডায়মন্ড এগ কেন্দুয়াবরে গত ২০১৩ সালে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করে। এর মালিক কাওসার আহম্মেদ।

প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের জমি দখলে মেতে ওঠে। বারবার অভিযোগ করলেও নীরব ভূমিকা পালন করে থানা পুলিশ।

প্রতিষ্ঠানটির অত্যাচার এখনো থামেনি। হাজার হাজার বস্তা মুরগির বিষ্ঠা রাতের আঁধারে ফেলা হচ্ছে লোকালয়ে।

যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে বিষ্ঠার বস্তা। ডায়মন্ডের উত্তর পাশের সুলতান উদ্দিনের বাড়ির পাশ থেকে ছবিটি তোলা।

এতে একদিকে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ ও প্রতিবেশ। অপরদিকে ঝুঁকিতে পড়ছে জনস্বাস্থ্য।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ বিষ্ঠা বাহিনী গড়ে তুলেছে। রাত হলেই তারা ট্রাক, পিকআপ ও লরিযোগে বিভিন্ন স্থানে বিষ্ঠা খালাসে নেমে পড়ে।

প্রতিষ্ঠানটির তিন নম্বর গেটের ভেতরে একটি শেডের নিচে প্রতিদিনের বিষ্ঠা স্তূপ করা হয়। খালাস শেষ না হলে অবশিষ্টগুলো পাশের খোলা জায়গায় রাখা হয়।

প্রতিদিন রাত ১০টার পর বিষ্ঠা বাহিনীর সদস্যরা কাজ শুরু করেন। চলে ভোর পর্যন্ত।

তারা রাস্তার ধারে কিংবা জঙ্গল বা উন্মুক্ত স্থানে বিষ্ঠা খালাস করেন। অর্ধেকের মত মাছের খামারে বিক্রি হয়।

এ ছাড়া ৫০০ টাকার লোভ দেখিয়ে বিষ্ঠা কৃষকদের জমিতেও ফেলা হয়। একজনের জন্য দুর্গন্ধে ভুগেন বহুজন।

সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বস্তাপ্রতি বিষ্ঠা থাকে ২৫-৩০ কেজি। প্রতি রাতে ২০টি ট্রাক ও পিকআপ এবং ১০টি লরি দিয়ে তা খালাস করা হচ্ছে।

পুরনো বস্তা বেশি জমলে গাড়ির সংখ্যাও বাড়ে। পরিবহনের সময় বিষ্ঠা রাস্তায় পড়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।

আক্রান্ত এলাকাগুলোর মধ্যে কেন্দুয়াব, বীরউজলী, দিঘীরপাড়, বড়চালা, ডুমদিয়া, আড়ালিয়া গঙ্গার বাজার, টোকনগর, উলুসারা, বড়দিয়া, পাঁচুয়া, কাশেরা, পূবাইল, ডঙ্গী, কপালেশ্বর, নামিলা, সোহাগপুর, রায়েদ ইউনিয়নের বেলাশী ও বারিষাবরের বারাব উল্লেখযোগ্য।

কৃষকরা অভিযোগ করেন, তরল বর্জ্যে জমির উর্বরাশক্তি বিনষ্ট হচ্ছে। অনেক জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে ডায়মন্ডের ম্যানেজার আবদুর রব আলোকিত নিউজকে বলেন, যেটা দূষণ হয়েছে, আমরা ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। পরবর্তী সময়ে যেটা আছে, সম্পূর্ণ আমাদের আয়ত্তে নিয়ে এসেছি।

তিনি দাবি করেন, এখন বিষ্ঠা কোন জায়গায় ফেলা হয় না। যেখান থেকে কিনে নেওয়ার দরকার, সেখান থেকে কিনে দূরে নিয়ে যায়।

আরও প্রতিবেদন আসছে…

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker