গাজীপুরের গজারিয়া পাড়ায় বনের পুকুর দখল : পাল্টাপাল্টি মামলায় নিরীহ দুলাল আসামি!

নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরের গজারিয়া পাড়ায় বনের বড় একটি পুকুর নিয়ে কতিপয় কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

পাল্টাপাল্টি মামলার পর এখন দখল নিয়েছেন বন বিভাগের রিটেইনার। সাইনবোর্ডে ‘ওয়াশনমূলে মালিক’ লিখে চলছে মৎস্য চাষ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান রেঞ্জের বাউপাড়া বিট এলাকার গজারিয়া পাড়াস্থ ওই পুকুরের আয়তন ১৭ বিঘা। এটি আগে ভাওয়াল রাজ এস্টেটের নামে রেকর্ড ছিল। পরে বন বিভাগের নামে গেজেটভুক্ত হয়।

পুকুরটি খনন করে দীর্ঘদিন ভোগদখল করেছেন ঢাকার শিল্পপতি আবদুল মালেক। এ নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে।

গত বছর পুকুরটি লিজ দেয় বন বিভাগ। আর তা কৌশলে বাগিয়ে নেন বন বিভাগের গাজীপুর আদালতের রিটেইনার রেজাউল করিম রাজু। সাইনবোর্ডে কথিত মালিক হিসেবে আছেন তার ছোট ভাই জহিরুল ইসলাম। তাদের গ্রামের বাড়ি কালিয়াকৈরে।

ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, রেজাউল করিম রাজুর এক আত্মীয় বন বিভাগের কর্মকর্তা। তারা প্রভাব খাটিয়ে পুকুরটি লিজ নিয়েছেন। আগের দখলদারের ২০-৩০ লাখ টাকার মাছ লুট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে গত ১১ সেপ্টেম্বর একটি মামলা করেছেন বাউপাড়া বিট কর্মকর্তা এমদাদুল হক। মামলা নং ২২৫/১৫। এই মামলায় নিরীহ একজনকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিট কর্মকর্তার আরজিতে বলা হয়, ওই আবদুল মালেক ও স্থানীয় দুলাল মিয়া বনের জমি থেকে আকাশমণি গাছ কেটেছেন। ১ নং আসামি মালেক (৬০) কুড়াল দিয়ে গাছের ডালপালা ছাঁটেন। আর দুলাল মিয়া লগ তৈরি করেন।

এলাকাবাসী জানান, দুলাল মিয়া খেটে খাওয়া সাধারণ লোক। তিনি শিল্পপতি মালেকের আত্মীয় মাজহারুল কাদেরের হ্যাচারিতে চাকরি করেন। পাশাপাশি ওই শিল্পপতির কিছু জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষও করেন। এই জেরে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

দুলাল মিয়া অভিযোগ করেন, তাকে বাড়াবাড়ি করলে আরও মামলা দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। লিজ গ্রহীতা বলে বেড়ান, মামলা করলে তাদের টাকা লাগে না। যে কোন সময় বনের বা মাছ চুরির মামলায় ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। ফলে তিনি পরিবার নিয়ে হতাশায় দিনযাপন করছেন।

বিট কর্মকর্তার বক্তব্য : এ ব্যাপারে বিট কর্মকর্তা এমদাদুল হকের সাথে কথা হয় তার অফিসে। সরকারি পুকুর লিজ নিয়ে কেউ ওয়াশনমূলে মালিক লিখতে পারে কি না-জানতে চাইলে বলেন, আপনি ভুল দেখেছেন। পরে তাকে ক্যামেরায় উঠানো ছবি দেখালে বলেন, ওয়াশন বলতে কোন কিছু নেই। মালিকও লেখা যায় না। ওই মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, দুলাল মিয়া শিল্পপতিকে সব জানায়। আমি যা বলার আদালতে বলব।

এই সেই পুকুর
এই সেই পুকুর

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker