গাজীপুরে বন দখল করছে রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট, কাটা হচ্ছে গাছ!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরে রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট সম্প্রসারণে সংরক্ষিত বনভূমি দখল ও গাছ কাটা হচ্ছে।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের অধীন ভাওয়াল রেঞ্জের বারুইপাড়া বিট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে এ ঘটনা ঘটছে।

সরেজমিনে জানা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভবানীপুর বাজার থেকে পূর্ব দিকে গ্রিনটেক রিসোর্ট পেরিয়ে বনের গহীনে বিলাসবহুল রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট লিমিটেড। রিসোর্টের পশ্চিম পাশে গত ২০২১ সালে নতুন স্পটের কার্যক্রম শুরু হয়।

বন দখল করে রাস্তা

‘সিলভার রেইন’ নামের এই স্পটের চারপাশে সংরক্ষিত গজারি বন। সেখানে এরই মধ্যে বনভূমি দখল করে তিনটি সংযোগ রাস্তা করা হয়েছে। কাটা হয়েছে ছোট-বড় কিছু গাছ।

কর্তনকৃত গাছের মোথা

রাস্তা তিনটির মধ্যে একটি পাকা। পাকা রাস্তার পাশে দেখা গেল কয়েকটি নতুন ও পুরনো গজারি গাছের মোথা।

মূল গেটের রাস্তার দখলীয় অংশে ধীরে ধীরে বন উজাড় করা হয়েছে। এখন সেই অংশ পাকা করার প্রক্রিয়া চলছে।

গত বছর রাস্তার জন্য বন উজাড়

ভেতরে ঢুকে কটেজে যাওয়ার রাস্তাও বন ঘেঁষে। রাস্তাটি নির্মাণের সময় কাটা হয়েছে বেশ কিছু ডালপালা। সেখানকার বাউন্ডারি ওয়ালের কিছু অংশও বনে পড়েছে।

বনের ক্ষতি করে নির্মাণ কাজ

এদিকে মূল রিসোর্টের পূর্ব পাশ দিয়ে সম্প্রসারণ কার্যক্রম চলছে। সেখানে বনের ভেতর দিয়ে নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন করা হচ্ছে।

বন দিয়ে মূল রিসোর্টের রাস্তা

হাঁটাচলার প্রায় এক কিলোমিটার সাধারণ পথটি পরিণত হচ্ছে ব্যবসায়িক রাস্তায়। বালুবাহী ট্রাকের ধাক্কায় ভেঙে যাচ্ছে গাছপালা।

ভাঙছে বনের গাছপালা

সম্প্রসারিত স্পটে বন ঘেঁষে হাঁটার জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে ওয়াক ওয়ে। চলছে বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ।

ডিমারকেশনের খুঁটি ছাড়াই চলছে কাজ

এ ছাড়া মূল রিসোর্টের উত্তর পাশে বনের ওপর দিয়ে আরেকটি রাস্তা করার প্রক্রিয়া চলছে। ইতিপূর্বে সেখান দিয়ে নির্মাণ সামগ্রী নেওয়ায় প্রায় এক শতাংশ বন উজাড় হয়েছে।

রাস্তার জন্য বন উজাড়

স্পট দুটির কোথাও ডিমারকেশনের খুঁটি পাওয়া যায়নি। বন কর্মকর্তারা যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বন ও পরিবেশ-প্রতিবেশ।

বনের ক্ষতি হচ্ছে অবাধে

বন বিভাগের একজন বলেন, বনের ভেতরে থাকা জোত জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করলে অবশ্যই যৌথ ডিমারকেশন লাগবে। এ ক্ষেত্রে রেকর্ডের বা নিজস্ব রাস্তা ব্যতীত বনের ওপর দিয়ে রাস্তা করার সুযোগ নেই।

বনের ভেতর দিয়ে রাস্তা

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট বিট অফিসের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। শুরুতে প্রতিরোধ না করায় ক্ষতি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

বারুইপাড়া বিট কর্মকর্তা আবুল কালাম সামসুদ্দিন গত বছর আলোকিত নিউজকে বলেছিলেন, রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট ডিমারকেশনের জন্য আবেদন করেছে। তাদেরকে বনের ওপর দিয়ে রাস্তা না করতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জোর করলে মামলা দেওয়া হবে।

সিলভার রেইনের দখলকাণ্ডের ছবিটি ২০২১ সালে তোলা

কিন্তু কয়েক মাসের ব্যবধানে বাস্তব অবস্থা পাল্টে গেছে। রাস্তাগুলো চলাচলের উপযোগী করে অন্যান্য কার্যক্রমও অবাধে চলছে।

এ ব্যাপারে রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্টের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলার জন্য মোবাইলে যোগাযোগ করলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker