দুর্নীতি ধামাচাপা : গাজীপুর সদরের টিও শামীমের খুঁটির জোর কোথায়?

ঘটনার আড়ালে প্রতিবেদন : গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
মন্ত্রণালয় থেকে তদন্তের নির্দেশ দিলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। গত চার বছরেও তাকে বদলি করা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুর জেলায় কর্মরত আছেন। তিনি সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি যোগদান করেন।
এর আগে শামীম আহমেদ ২০১৫ সালে কাপাসিয়ায় ছিলেন। সেখানে নানা স্বেচ্ছাচারী কর্মকাণ্ডে বিতর্কিত হয়ে এক বছরের মাথায় ২০১৬ সালে কালীগঞ্জে বদলি হন।
সেখানে এক শিক্ষককে মারপিটের ঘটনায় ২০১৭ সালে তাকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বদলি করা হয়। ভেরব উপজেলায়ও বিতর্কিত হলে তাকে ইটনায় বদলি করে কর্তৃপক্ষ।
অতঃপর শামীম আহমেদ ওপরে তদবির করে আবারও পোস্টিং নেন গাজীপুরে। এবার তার দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে যায়।
এক পর্যায়ে জেলার কয়েকজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এতে বিভিন্ন খাতে সরকারি বরাদ্দের টাকা ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাৎ, শিক্ষকদের বদলিতে ঘুষ নেওয়া, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও হয়রানির প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়।
পরে ১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সাবেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করেননি।
এদিকে শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহমেদ বদলি ঠেকাতে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলাও করেছেন। ছেলের পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে ২০২১ সালে করা মামলাটি অদ্যাবধি নিষ্পত্তি হয়নি।
আলোচিত শামীম আহমেদ আগে গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজের নাম ভাঙাতেন। বর্তমান সাংসদ অধ্যাপক রুমানা আলী টুসি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর তার বোল পাল্টে গেছে।
তিনি ইতিমধ্যে আনুকূল্য পেতে ফুলের তোড়া নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর বাসভবনে ধরনা দিয়েছেন। শিক্ষা প্রশাসনের শৃঙ্খলা রক্ষায় তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ভুক্তভোগী কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের।
উল্লেখ্য, শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহমেদের বাড়ি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও গ্রামে। বাণিজ্যের স্বার্থে তিনি গাজীপুর ছাড়তে চান না বলে অভিযোগ।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহমেদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার আড়ালে-কে বলেন, ডিপার্টমেন্ট যদি বদলি না করে আমি কিভাবে যাব? বদলি করলে চলে যাব।
প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা প্রসঙ্গে শামীম আহমেদ বলেন, তাকে এক বছর দুই মাসের মাথায় বদলি করা হয়েছিল। তখন এক ছেলের জেএসসি ও আরেক ছেলের এইচএসসি পরীক্ষা ছিল।
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার না করে তিনি বলেন, তদন্ত হয়েছে, তদন্ত প্রতিবেদনও হয়েছে। এটিওদের বক্তব্য আমার নেওয়া আছে, এটিওদের জিজ্ঞাসা করেন।

আরও খবর

Back to top button