গাজীপুরে ম্যাকডোনাল্ডের বনদস্যুতায় বন কর্মকর্তারা উদার!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরে বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য এলাকায় সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে গাড়ি চলাচল অব্যাহত রয়েছে।

সরকারি আকাশমনি বাগানের গাছ পরিবহনের কথা বলে ম্যাকডোনাল্ডসহ তিনটি কারখানাকে এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

এতে প্রায় এক বিঘা বনভূমি বেহাতের পাশাপাশি পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে।

এর আগে গত বছরের ৬ ও ১৯ নভেম্বর আলোকিত নিউজ ডটকমে দুটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

পরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বাউপাড়া বিট কর্মকর্তা খন্দকার আরিফুল ইসলাম ‘গাড়ি প্রবেশ নিষেধ’ সংবলিত দুটি খুঁটি পুঁতেন।

কিন্তু এক দিন পার না হতেই একটি খুঁটি উঠিয়ে দিন-রাত মালবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও প্রাইভেটকার চলাচল শুরু হয়।

এরপর থেকে অদ্যাবধি কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নীরব ভূমিকা পালন করছেন।

স্থানীয়রা জানান, আকাশমনি বাগানের এক অংশের গাছ কাটা ও নেওয়া জানুয়ারির প্রথম দিকেই শেষ হয়েছে। বাকি অংশে এখনো শুরু হয়নি। সরকারি প্রয়োজন ও ব্যক্তিগত প্রয়োজন এক কথা নয়।

সরেজমিনে প্রাপ্ত তথ্যমতে, জাতীয় উদ্যানের পশ্চিম পাশে নান্দুয়াইন এলাকায় বনের ভেতর দিয়ে করা হয়েছে ১০ ফুট প্রস্থের রাস্তা। গজারি বনের পর রাস্তাটি আকাশমনি বাগানের বুকও ভেদ করেছে।

এরই মধ্যে ইট-সিমেন্টের খোয়া ও বড় বড় খণ্ড ফেলে রাস্তা আধা পাকা করা হয়। যদিও বন ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা আইনে তা নিষিদ্ধ।

আধা কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পায়ে হাঁটার এই রাস্তা প্রথম সম্প্রসারণ করে ম্যাকডোনাল্ড কীটনাশক কারখানা। পরে যুক্ত হয় চায়না ব্যাটারি ও এশিয়ান পেইন্টসের কাঁচামাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।

এ ছাড়া ম্যাকডোনাল্ড বনভূমি দখল করে কারখানায় প্রবেশের রাস্তা করেছে। এসব তথ্য গোপন করে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও বাগিয়ে নিয়েছে।

এদিকে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জহির উদ্দিন আকন (বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

তিনি আলোকিত নিউজকে বলেছিলেন, রাস্তা দিয়ে যাতে গাড়ি চলাচল না করে লক্ষ্য রাখছি। গাড়ি চলাচল বন্ধ করলে বনের অনেক উপকার হবে।

বাউপাড়া বিট কর্মকর্তা আলোকিত নিউজকে বলেন, আকাশমনি বাগান কাটা শেষ হলে বনায়নের জন্য চারা নেওয়া হবে। সব মিলিয়ে প্রায় এক বছর লাগবে। এর আগে রাস্তা বন্ধ করা যাবে না।

গাড়ি চলাচল বন্ধে ম্যাকডোনাল্ডের দখলীয় সামনের অংশে খুঁটি পোঁতা যায় কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা করা যেতে পারে। কয়েক দিনের মধ্যে করব।

এরপর সাড়ে তিন মাস পার হলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কারখানাগুলো যোগসাজশ করে রাস্তাটি টিকিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ।

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker