অবৈধ কার্যক্রমে গাজীপুরশাহীনের বাণিজ্য রমরমা!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের অলিগলিতে বিভিন্ন নামে গড়ে উঠছে কিন্ডারগার্টেন স্কুল।

সরকারি নীতিমালার শর্তাবলি পূরণ না করেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে রমরমা শিক্ষা বাণিজ্য।

তবে এসব বন্ধে জেলা শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রশাসনের কোন তৎপরতা নেই।

নগরীর জোড়পুকুর রোড এলাকায় ২০০৩ সালে ভাড়া ভবনে গড়ে ওঠে গাজীপুরশাহীন ক্যাডেট একাডেমি।

জেলার কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর মধ্যে শিক্ষার্থী সংখ্যা, শাখা ও ক্যাম্পাসে শীর্ষ অবস্থানে এটি।

গাজীপুরে তাদের শাখা সাতটি ও ক্যাম্পাস দুটি। এর বাইরে ভালুকার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি ও নরসিংদীর মাধবদীতে দুটি শাখা রয়েছে।

গাজীপুরের শাখাগুলো হল চান্দনা চৌরাস্তা, বোর্ডবাজার, টঙ্গী, কোনাবাড়ি, শ্রীপুরের মাওনা, কাপাসিয়া ও কালিয়াকৈরের সফিপুর।

জোড়পুকুর রোডের প্রধান ক্যাম্পাস ছাড়াও জয়দেবপুর বাসস্ট্যান্ড ও শিমুলতলীতে রয়েছে দুটি ক্যাম্পাস।

অনুসন্ধানে জানা যায়, স্কুলটির প্রাথমিক অর্থাৎ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি আছে। মাধ্যমিক কার্যক্রমের কোন অনুমতি নেই।

কিন্তু তাদের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম চলছে। ভর্তি হচ্ছে শত শত শিক্ষার্থী।

প্রাথমিকে মাসিক বেতন ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা। আর মাধ্যমিকে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা।

এ ছাড়া স্কুলভিত্তিক কোচিং ১২০০-১৫০০ টাকা। কম টাকা বেতনে কলেজ শিক্ষার্থীদের দিয়েও করানো হচ্ছে ক্লাস।

অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি ফি কত? জানতে চাইলে প্রধান কার্যালয়ের এক নারী কর্মকর্তা হিসাব লিখে কাগজ ধরিয়ে দেন।

এতে দেখা যায়, অনাবাসিকে ভর্তি ফি ২০০০ টাকা, সেশন ফি ৪০০০ টাকা ও বেতন ১৭০০ টাকাসহ মোট সাত হাজার ৭০০ টাকা।

আর আবাসিকে ভর্তি ফি ৪০০০ টাকা, সেশন ফি ছয় হাজার ৫৫০ টাকা ও বেতন সাত হাজার ৫০০ টাকাসহ মোট ১৮ হাজার ৫০ টাকা।

গত ১৫ বছর ধরে কীভাবে চলছে এই অনিয়ম? সচেতন মহল দুষছে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের।

অভিভাবকরা বলছেন, তারা ভাল লেখাপড়ার আশায় সন্তানদের ভর্তি করেছেন। এখন জানতে পারছেন, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন অন্য স্কুল থেকে করতে হয়।

অনেক অভিভাবক অবৈধ কার্যক্রমের বিষয়টি জানেন না। চটকদার প্রচারণায় আকৃষ্ট হয়ে বাড়তি টাকা গুনছেন তারা।

স্কুলটির চেয়ারম্যান ফারুক সিকদার ও এমডি সোহেল রানা চৌধুরী। দুজনের গ্রামের বাড়িই টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে।

জানতে চাইলে ফারুক সিকদার ইতিপূর্বে আলোকিত নিউজকে বলেন, আমরা প্রাথমিক পর্যন্ত চালাই। মাধ্যমিক চালাই না। ওটা কোচিং।

অথচ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলছেন, একটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মতই চলছে গাজীপুরশাহীনের কার্যক্রম।

তা ছাড়া কোচিং সেন্টার হলেও বিনামূল্যের সরকারি বই পাওয়ার কথা নয়। কীভাবে নিচ্ছে এ সুবিধা?

প্রশ্নটি করা হয়েছিল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানাকে। যিনি ঘুরেফিরে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরে কর্মরত।

তিনি আলোকিত নিউজকে বলেন, মন্ত্রণালয়েরই নিয়ম, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি থাকে, বই দিতে হবে। বই যেহেতু বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না।

সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, অবৈধ হয়েও বই পাওয়াতে ওদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে। কর্তৃপক্ষের কঠোর হওয়া উচিত।

অনুমোদনের ব্যাপারে রেবেকা সুলতানা বলেন, তাদের মাধ্যমিকের কোন অনুমতি নেই। শাখা করারও কোন নিয়ম নেই।

অনিয়মগুলো নিয়ে কোন তদন্ত করেছেন কি না-এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শত শত প্রতিষ্ঠান। আমাকে কেউ তদন্ত দেয়নি।

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker