কাপাসিয়ায় ঘুষ নিয়ে ডাইরিতে হিসাব রাখেন নায়েব আলমগীর!

আলোকিত প্রতিবেদক : সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে ডাইরিতে হিসাব লিখে রাখেন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন।

তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সরেজমিনে জানা যায়, আলমগীর হোসেন ২০১৭ সালের মার্চ মাস থেকে সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আছেন। তার বাড়ি উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের বাঘুয়া গ্রামে।

সাড়ে তিন বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ তাকে বদলি করেনি। সুযোগ পেয়ে তিনি অফিসটিতে দুর্নীতির ডাইরি খুলেছেন।

সেবাপ্রার্থীরা অভিযোগ করেন, কাপাসিয়া বাজার সংলগ্ন এই ভূমি অফিসে বাড়তি টাকা ছাড়া জমির খাজনা-খারিজ করা যায় না। ভূমি কর্মকর্তা নিজে ও এক কথিত উমেদারের মাধ্যমে বাণিজ্য করছেন।

খোদাদিয়া গ্রামের তাজউদ্দিন আলোকিত নিউজকে জানান, তিনি স্বামীহারা ও এতিম ভাতিজির ১৩ গন্ডা জমির খারিজের জন্য নায়েব আলমগীরের কাছে গেলে ২০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। গরিব মানুষ বললেও নায়েব টাকা কমাতে রাজি হননি।

পরে চার কিস্তিতে ১৮ হাজার টাকা দিলে তিনি মেনে নেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর তাকে দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়।

আলোকিত নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক হাসিব খানের ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা যায়, তাজউদ্দিন অফিসের ভেতরে ভূমি কর্মকর্তা আলমগীরকে টাকা দিচ্ছেন। নায়েব ৫০০ টাকার চারটি নোট গুনে ডাইরিতে হিসাব মিলিয়ে দেখেন।

পরে তিনি টাকা উমেদার জুয়েলের হাতে দেন। জুয়েল ক্যাশিয়ার হিসেবে তা জমা রাখেন।

বরুন গ্রামের বিল্লাল হোসেন বলেন, বরুন বাজারের এক গন্ডা জমির খারিজের জন্য নায়েব আমার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে নয় হাজার টাকা দেই। আট মাসেও খারিজের কপি পাইনি।

খোদাদিয়া গ্রামের নাজিম উদ্দিন জানান, নায়েব আলমগীর তার কাছ থেকে সাড়ে সাত গন্ডা জমির খারিজের জন্য ১৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। এক বছর পার হলেও আজ-কাল করে ঘোরানো হচ্ছে।

বড়টেক গ্রামের জয়নাল আবেদীন জানান, তিনি গত ২২ সেপ্টেম্বর ৬০ শতাংশ জমির খাজনা দিতে গেলে নায়েব ছয় হাজার টাকা নেন। কিন্তু রসিদ দেওয়া হয় তিন হাজার ৬৪০ টাকার।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আলমগীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথমে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এক পর্যায়ে আলোকিত নিউজকে বলেন, মানুষের কাজ উদ্ধারের লাইগা কিছু না কিছু হইতেও পারে। আমরা যে ডিপার্টমেন্টে কাজ করি, এইটা তো বুঝেনই।

পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, ভূমি অফিসের দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিচ্ছে। কর্তৃপক্ষ কঠোর না হওয়ায় জনসাধারণের ভোগান্তি বাড়ছে।

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker