গাজীপুরে আম্বার ও পারটেক্স গ্রুপের ভয়াবহ দূষণ!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরে আম্বার ও পারটেক্স গ্রুপের দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

নগরীর ২২ নং ওয়ার্ডের জাঙ্গালিয়াপাড়া এলাকায় গ্রুপ দুটির দূষণকারী তিনটি প্রতিষ্ঠান অবস্থিত।

প্রতিষ্ঠানগুলো হল আম্বার ডেনিম, আম্বার টেক্সটাইলস ও পারটেক্স বেভারেজের কোমল পানীয় আরসি কোলা।

এর মধ্যে আম্বারের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন পারটেক্স গ্রুপের এম এ হাসেমের ছেলে শওকত আজিজ রাসেল।

তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা ও সাধারণ মানুষের জমি জবর দখলের অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা থেকে বাংলাবাজার যাওয়ার পথে প্রথমে আম্বার ডেনিম। কারখানাটির পশ্চিম ও উত্তর পাশের বিস্তীর্ণ জমিতে নির্গত হচ্ছে অপরিশোধিত তরল বর্জ্য।

ফসলি ওই জমি যেন কুচকুচে কালো পানির বিল। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে তা দিন-রাত পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে লবলং সাগরে গিয়ে পড়ছে।

বাংলাবাজারের পশ্চিম পাশে বিশাল আয়তন নিয়ে আরসি কোলা। পাশেই আম্বার টেক্সটাইলস।

কারখানা দুটির বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য উত্তর পাশে চোঙা বসিয়ে পাইপলাইন করা হয়েছে। সেটি দিয়ে দূষিত পানি ইপিলিয়ন কারখানার পাশ হয়ে লবলং সাগরে প্রবাহিত হচ্ছে।

ইপিলিয়ন কারখানাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, চোঙাগুলোর সংযোগস্থল দিয়েও কালো পানি অনবরত বের হচ্ছে। লবলং সাগরমুখী নিচু জমিতে বর্জ্যের ঘনত্ব আশঙ্কাজনক।

আরসি কোলা ও আম্বার টেক্সটাইলসের দূষিত পানির প্রবাহ

সেখানে কয়েকজনের সাথে কথা হয় আলোকিত নিউজের। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি ও মিডিয়ার নীরব ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

স্থানীয় ছয়ফর আলী (৬০) বলেন, দূষিত পানিতে জলাবদ্ধতার কারণে পৌনে ১০০ বিঘা জমিতে ফসল করা যাচ্ছে না। আগে দুই-তিন ফসল করা যেত।

তিনি আরও বলেন, লোকজন কালো পানিতে নামেন না। হাত-পায়ে লাগলে সাথে সাথে চুলকায়।

আম্বার ডেনিমের পাশে দেখা গেল, দূষণে কচুরিপানাও মারা যাচ্ছে। বাসিন্দাদের মধ্যে বিশেষ করে শিশুরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে।

এদিকে ২০১৫ সালে পরিবেশ দূষণ ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টির দায়ে আরসি কোলা কারখানার উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেন তখনকার জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম।

পরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়। কিন্তু তা আর আলোর মুখ দেখেনি।

এলাকাবাসী জানান, জেলা প্রশাসক চাপ দেওয়ার পর দূষিত পানি লোকালয়ের বদলে ওই পাইপলাইন দিয়ে ছাড়া হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরেরও কোন তৎপরতা নেই।

ওয়াকিবহাল একজন বলেন, কারখানাগুলো ইটিপি নিয়মিত চালু না রাখায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ-প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে।

এ ব্যাপারে আম্বার গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করলে ফ্রন্ট ডেস্ক থেকে বলা হয়, কেউ বক্তব্য দিবে বলে মনে হয় না।

এরপর নাম-পরিচয় নোট নিয়ে বলা হয়, আমি স্যারকে আপনার নম্বর দিব। উনি প্রয়োজন মনে করলে যোগাযোগ করবে।

বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবদুস সালাম সরকারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল ধরেননি।

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker