কাপাসিয়ায় ৪ বিঘা সরকারি বন বিক্রি, উজাড় করে কৃষি খামার!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের কাপাসিয়ায় চার বিঘা সরকারি গজারি বন উজাড় করে বিক্রি করা হয়েছে।

তাতে গড়ে উঠেছে কাপাসিয়া এগ্রো ফার্ম নামের খামার। নির্মাণ করা হয়েছে স্থাপনা।

উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের বড়হর মারুলিয়াপাড়া এলাকায় এ দখলযজ্ঞ চললেও শ্রীপুর রেঞ্জের গোসিংগা বিট অফিস কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, টোক-কাপাসিয়া রোডের বড়হর এলাকার মজিদ মোল্লা মাদ্রাসার কিছুদূর পশ্চিমে বীর মুক্তিযোদ্ধা হারিছ উদ্দিনের বাড়ি। বাড়িটির দক্ষিণ পাশে কাঁটাতারের বেড়াবেষ্টিত দখলীয় বনভূমি।

ভেতরে ঢুকতেই টিনশেড ও আধা পাকা ঘর। পশ্চিম পাশে গরুর খামার। দক্ষিণ অংশে পেয়ারাসহ বিভিন্ন ফলের বাগান।

ফলের বাগানের একাংশ

কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, বড়হর মৌজার সিএস ৫০১ নং দাগের ওই জমি বন বিভাগের নামে গেজেটভুক্ত। সেখানে তিন বছর আগেও গজারি বন ছিল।

মৈশন এলাকার মৃত সাদির মুন্সির ছেলে বাবুল প্রথমে খুঁটি পুঁতে বনভূমি দখল করেন। পরে প্রকাশ্যে প্রায় ২০০ গজারি গাছ কেটে বন উজাড় করা হয়।

এরপর তিনি গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মো. আসাদের কাছে জমি বিক্রি করে দেন। পরে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে গরুর খামার ও স্থাপনা নির্মাণ করা হয়।

স্থাপনা নির্মাণ

ওই এলাকায় বিঘাপ্রতি জমির বর্তমান বাজারমূল্য ১৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে শুধু দখলীয় জমির মূল্য দাঁড়ায় ৬০ লাখ টাকা।

ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, বাবুল বিট কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানের আমলে বনভূমি দখল করে গাছ বিক্রি করেন। পরে বিট কর্মকর্তা বিপ্লব হোসেনের আমলে কাঁটাতারের বেড়া ও স্থাপনা নির্মাণ করা হয়।

এভাবে বন ধ্বংস করায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশের বিপুল পরিমাণ ক্ষতিসাধন হয়েছে। বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকায় কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সূত্র আরও জানায়, ওই জমি তৎকালীন সময়ে ১ নং খতিয়ানভুক্ত ছিল। তখন মৃত কেরামত আলী মোড়ল নামের একজন বন্দোবস্ত নিয়েছিলেন। পরে দাগটি বন বিভাগের নামে গেজেটভুক্ত হয়।

অভিযুক্ত বাবুল গাছ পাচারকারী হিসেবে পরিচিত। চকবড়হর নতুন বাজারে তার কাঠের দোকান রয়েছে।

জানতে চাইলে বাবুল আলোকিত নিউজকে বলেন, তিনি ওই জমি কেরামত আলীর কাছ থেকে কিনেছেন। চার-পাঁচ বছর আগে বেলাশীর সিরাজকে পাওয়ার দেন। পরে ডাক্তারের কাছে বিক্রি করা হয়।

গাছ প্রসঙ্গে দাবি করেন, সেখানে বন ছিল না। কয়েকটি গজারি গাছ ছিল, এখনো আছে।

অভিযুক্ত বিট কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানের বর্তমান কর্মস্থল জানা যায়নি। বিপ্লব হোসেন আছেন রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের সালনা বিটে। তাদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কল ধরেননি।

এ ব্যাপারে জমির ক্রেতা ডা. আসাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

গোসিংগা বিটের বর্তমান বিট কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম আলোকিত নিউজকে বলেন, বড়হর মৌজার ৫০১ নং দাগে মোট জমি চার একরের ওপরে। পুরো জমি বন বিভাগের নামে গেজেটভুক্ত। জমি উদ্ধার করতে হবে।

আরও পড়ুন : কাপাসিয়ার পাকিয়াবরে গাছ পাচার, বন কেটে প্লট বাণিজ্য!

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker