তবিবুরনামা : গাজীপুরের সাফারি পার্কে বিষ দিয়ে ৩০ শিয়াল হত্যা!

আলোকিত প্রতিবেদক : গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে গত এক মাসে দফায় দফায় ১১টি জেব্রা ও একটি বাঘের মৃত্যু হয়েছে।

শুরু থেকেই পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান ও প্রকল্প পরিচালক জাহিদুল কবির জুয়েল তা গোপন রাখার চেষ্টা করেন।

পরে ব্যাপক বিতর্কের মুখে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাদেরকে প্রত্যাহার করে বন অধিদপ্তর।

এর আগে সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমানের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে আলোকিত নিউজ ডটকমে একাধিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

পরে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা মেসার্স মাইছা এন্টারপ্রাইজের দুটি বড় প্যান্ডেল ও ফুড কোর্ট-১-এর দোকানপাট অপসারণ করা হয়।

এদিকে প্রাণীদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন ও করণীয় নির্ধারণে অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিককে প্রধান করে মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ করছে।

কমিটির অপর সদস্যরা হলেন উপ-সচিব আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতালের সাবেক প্রধান কর্মকর্তা ডা. এ বি এম শহীদুল্লাহ, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোল্যা রেজাউল করিম এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান।

অপরদিকে জেব্রাগুলোর মৃত্যুর আগে কয়েক দফায় বিষ দিয়ে অন্তত ৩০টি শিয়াল মেরে ফেলা হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এ নিয়ে তৃতীয় পর্ব আজ।

পার্কের একাধিক কর্মচারী আলোকিত নিউজকে জানান, গত ২ জানুয়ারি প্রথমে একটি অসুস্থ জেব্রা মারা যায়। এর কিছুদিন আগে অর্থাৎ ডিসেম্বরে খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে ১৫-২০টি শিয়াল মারা হয়। তার আগে আরও ১৫-২০টি শিয়াল মারা হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালকের নির্দেশে এসিএফ তবিবুর রহমান বিশ্বস্ত কর্মচারী দিয়ে বিষ মেশানোর কাজটি করেন। ওই খাবার খেয়ে শিয়ালগুলো গজারি বনের ভেতরে ছুটে যায়। পরে ছটফট করে মরে এদিক-সেদিক পড়ে থাকে। মৃতদেহগুলো মাটিচাপাও দেওয়া হয়নি।

তারা আরও জানান, এসিএফ শিয়ালের বিচরণ সহ্য করতে পারতেন না। শিয়ালগুলো হরিণের বাচ্চা খেয়ে ফেলবে-এমন আশঙ্কার কথা তিনি প্রকল্প পরিচালককে জানান। পরে মেরে ফেলার গোপন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও শিয়ালের দ্বারা পার্কের ভেতরে প্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির কোন রেকর্ড নেই।

একজন বন কর্মকর্তা বলেন, শিয়াল মারা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে তফসিলভুক্ত অপরাধ। সাফারি পার্কের ঘটনাটি পরিকল্পিত। তাই তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, দেশে শিয়াল হত্যায় জেল-জরিমানার নজির অনেক আছে। যেখানে প্রাণীদের জন্য পার্ক করা হয়েছে, সেখানে রক্ষকদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড চরম নিষ্ঠুরতার শামিল।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসিএফ তবিবুর রহমানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল ধরেননি।

আরও পড়ুন : গাজীপুরের সাফারি পার্কের বিতর্কিত এসিএফ তবিবুর অবশেষে ক্লোজড

আরও খবর

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker