গাজীপুরের মনিপুর বিটে এক বিঘা বনভূমি দখল করে টাইলস মার্কেট, লেনদেন ৩ লাখ!
ঘটনার আড়ালে প্রতিবেদন : গাজীপুরে এক বিঘা মূল্যবান বনভূমি দখল করে টাইলস মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। কেটে ফেলা হয়েছে কয়েকটি ছোট গজারি গাছ।
ঢাকা বন বিভাগের রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের মনিপুর বিটের বেগমপুর হোতাপাড়া এলাকায় প্রকাশ্যে ঘটনাটি ঘটছে। স্পটটি বিট অফিসের কাছে হলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
সরেজমিনে জানা যায়, হোতাপাড়া এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক সংলগ্ন ইএসবিল কারখানার পূর্ব পাশে বোকরান মনিপুর মৌজার সিএস ৫৮৬ নং দাগের জমি বন বিভাগের নামে গেজেটভুক্ত। ১৯৮২ সালে বন শ্রেণির এই দাগের ১ একর ৫০ শতাংশ জমি ১ নং খতিয়ানমূলে সাতজনের নামে বন্দোবস্ত দিয়েছিল জেলা প্রশাসন।
পরে তা বন বিভাগের নামে গেজেটভুক্ত হলে ১৯৯৩ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই বন্দোবস্তের খাজনা-খারিজসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার স্মারক নম্বর রেভ-২২১৬/৯৩।
এরপর থেকে সেখানকার জমি সংরক্ষিত বনভূমি হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে বন বিভাগ। ফলে গজারি বন সম্প্রসারিত হয়ে বন্যপ্রাণীর আবাস সৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হারে বনভূমি দখল শুরু হয়। বাদ যায়নি মনিপুর বিটও।
বিটটির কয়েকটি স্থানে জবর দখল হয়েছে। গড়ে উঠেছে স্থাপনা। তবে গত মাস থেকে চলছে আপস দখল। মামলার ভয়ে দখলকারীরা বিট অফিসে লেনদেন করে নির্বিঘ্নে মার্কেট ও বাড়িঘর নির্মাণ করছেন।
বিট অফিস সুযোগ দেওয়ায় বন্দোবস্ত নামের সাড়ে চার বিঘা বনভূমি দখলে নেওয়ার তৎপরতা শুরু হয়েছে। গত মাসের প্রথম দিকে প্রায় এক বিঘা দখলে নিয়ে টাইলস মার্কেট নির্মাণের কাজ শুরু করে শামীম গং। দক্ষিণ অংশ থেকে কেটে ফেলা হয় কয়েকটি ছোট গাছ।
এরই মধ্যে ১৪টি দোকানের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অ্যাডভান্স বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে দোকানগুলো দ্রুত ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
বিট অফিসের একটি সূত্র জানায়, ওই মার্কেট নির্মাণের কাজ শুরু হলে বিট কর্মকর্তা ওয়ালিদ বিন মতিন গিয়ে প্রথমে বাধা দেন। পরে দখলকারীরা তিন লাখ টাকা লেনদেন করে কাজ অব্যাহত রাখেন। কৌশল হিসেবে লিজের জমি প্রচার দেওয়া হয়। অথচ দখলীয় আরএস ১৭০৯ নং দাগের পুরো জমি বন বিভাগের ২ নং খতিয়ানভুক্ত।
স্থানীয়রা জানান, শিল্প কারখানা অধ্যুষিত ওই স্থানে জমির দাম আকাশচুম্বী। দখলকৃত বনভূমির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।
এ ব্যাপারে মনিপুর বিট কর্মকর্তা ওয়ালিদ বিন মতিনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার আড়ালে-কে বলেন, ওই জমি এই মুহূর্তে ১ নং খতিয়ানে আছে। আমরা ২ নং খতিয়ানে নেওয়ার আবেদন করেছি। এটার অনেক কাহিনি, অনেক ঝামেলা।