কালিয়াকৈরের রঘুনাথপুর বিটে দখল বাণিজ্য : দ্বন্দ্বে গোমর ফাঁস, ৪ জন বরখাস্ত

ঘটনার আড়ালে প্রতিবেদন : বনভূমি জবর দখলে সহযোগিতা করার ঘটনায় গাজীপুরের কালিয়াকৈর রেঞ্জের রঘুনাথপুর বিট কর্মকর্তা ও তিন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্তকৃতরা হলেন বিট কর্মকর্তা আসেক আলী, বাগান মালি কাম গার্ড হাশেম আলী মাতবর, বাগান মালি কাম গার্ড সিদ্দিকুর রহমান ও নিরাপত্তা প্রহরী কামাল হোসেন।
ঢাকা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এস এম সাজ্জাদ হোসেন প্রথমে গত ৩ মার্চ তিন কর্মচারীকে বরখাস্ত করেন। এতে রঘুনাথপুর বিটের সোনাতলা ও মধ্যচক মৌজায় বনভূমি জবর দখলে অনৈতিক যোগসাজশের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করার বিষয় তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বরখাস্তের আদেশ পেয়ে কর্মচারীদের পক্ষে হাশেম আলী মাতবর ডিএফওর সঙ্গে দেখা করে বনভূমি দখলে বিট কর্মকর্তা আসেক আলীর জড়িত থাকার তথ্য তুলে ধরেন। এর আগে ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ডও কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়।
পরে ডিএফও বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) আমীর হোসাইন চৌধুরীর কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন। সিসিএফ চট্টগ্রাম সফর থেকে ফিরে তাকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন।
অভিযুক্তদের মধ্যে হাশেম আলী মাতবর অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঘুরেফিরে গাজীপুরে আছেন। দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগে পূর্বে তিনবার বরখাস্ত হওয়ার পরও তার দৌরাত্ম্য থামেনি।
বাগান মালি হাশেম আলী মাতবর সদর উপজেলার মনিপুর এলাকায় জমি কিনে বাড়ি করেছেন। তিনি নিজেই মনিপুর বিটে বনের জমি দখল করে স্থাপনা তুলে ভাড়া দিয়েছিলেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
হাশেম আলী মাতবরের বিরুদ্ধে মনিপুর বিটের তৎকালীন বিট কর্মকর্তা আশরাফুল আলম দোলন পিওআর মামলাও করেছিলেন। সাবেক সিসিএফ ইউনুছ আলী তার চাচা ছিলেন। তখন তার দাপটে কর্মকর্তারাও থাকতেন তটস্থ।
রঘুনাথপুর বিট অফিস সূত্র জানায়, বিট কর্মকর্তা আসেক আলী ঘুষ বাণিজ্যে বেপরোয়া ছিলেন। তিনি স্টাফদের কিছু দিতে চাইতেন না। মূলত এ নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে গোমর ফাঁস হয়।
সূত্র আরও জানায়, গত ডিসেম্বরে ৪৪টি অবৈধ স’মিল থেকে চার লাখ ৩৮ হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়। বিট কর্মকর্তা আসেক আলী দেড় লাখ টাকা অনুষ্ঠানসহ বিবিধ খরচ দেখিয়ে বাকি টাকা নিজের কাছে রেখে দেন। এ নিয়ে তার সঙ্গে হাশেম আলী মাতবরের ঝগড়া হয়।
পরে আসেক আলী ডিএফওর কাছে অভিযোগ করেন। ডিএফও কৈফিয়ত তলব করলে কর্মচারীরা আসল ঘটনা উল্লেখ করে জবাব দেন। এরপর সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রেজাউল আলম তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button